,

সারাবিশ্বের ন্যায় নোয়াখালীতে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত হয়েছে

মোঃ আবুল বাসার,নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ ৩ মে শুক্রবার সারা বিশ্বে পালিত হয়েছে ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ বা বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস।এ উপলক্ষে শুক্রবার নোয়াখালী প্রেসক্লাবের আয়োজনে র‍্যালী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসক্লাব সভাপতি বখতিয়ার শিকদারের সভাপতিত্বে।সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের মঞ্জুর সঞ্চালনায় র‍্যালী ও আলোচনা সভায় জেলায় কর্মরত সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণ করেন। বক্তাগন বলেন
১৯৯১ সালে ইউনেসকোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ মোতাবেক ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৩ মে তারিখকে ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। দিবসটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত দায়িত্ব পালনে নিরাপদ পরিবেশের কথা সামনে আসে।
দেশের গণমাধ্যম বহুমুখী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের কাজের সুযোগ সংকুচিত করা হচ্ছে। আইনের অপব্যবহারের সুযোগ থাকায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে তা ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার রাজনীতিকরণ হওয়ায় দুর্বল হয়েছে জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো।
গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের পাশাপাশি সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হরণ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত করে তোলার জন্য অতীতেও বিভিন্ন আইন কার্যকর ছিল।
এর সঙ্গে আগে থেকেই ক্রিয়াশীল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন,ডাটা সুরক্ষা আইন,গণমাধ্যমকর্মী আইন ও ওটিটি নীতিমালার মতো নানা আইন ও নীতিমালা সংযুক্ত হয়েছে কিংবা হতে যাচ্ছে।
এসব আইন ও নীতিমালা নামে ভিন্ন হলেও এগুলোর যে পরিধি, তাতে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এসব আইনের মাধ্যমে একটি ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে।
তা বাদে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হরণ করার পাশাপাশি এসব আইন খোদ সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধেই প্রয়োগ করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এভাবে গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিকাশ হবে না।গণতন্ত্রকে ব্যাহত করার এই প্রক্রিয়াটি মুক্তিযুদ্ধের ও চেতনার পরিপন্থী।
সংবাদপত্র জগত আজ অনেকটা সংকুচিত।ছাপা কাগজের চাহিদা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে ডিজিটাল বাস্তবতা বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের জন্য একদিকে যেমন অনেক সুযোগ এনে দিয়েছে, তেমনি সাংবাদিকদের জন্য অনেক ঝুঁকি তৈরি করেছে।তাদের ওপর নজরদারি বেড়েছে।
সাংবাদিকতার স্বাধীনতা কেবল সাংবাদিক দের জন্যই নয়,বরং দেশ ও সমাজের বৃহত্তর স্বার্থেই রক্ষা করা দরকার। কর্মক্ষেত্রে জবাবদিহিতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। জবাবদিহিতা না থাকলে যেমন কার্যক্রম ব্যাহত হয়, তেমনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা না থাকলে আমাদের অন্যান্য স্বাধীনতা ও থাকে না। বক্তাগন আরো বলেন
বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকরা যুদ্ধ ও গণতন্ত্রের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিজেদের প্রাণ ঝুঁকিতে ফেলছেন।
বিশ্বজুড়ে আমরা গণমাধ্যম কর্মীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। ডিজিটাল টেকনোলজি, যা মানুষের পক্ষে হওয়া উচিত ছিল, গণতন্ত্রের পক্ষে হওয়া উচিত ছিল, উন্নয়নের পক্ষে হওয়া উচিত ছিল,তা এখন ব্যবহার হচ্ছে মানুষের চিন্তার বিরুদ্ধে, মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে।আমরা দেখছি কিন্তু দেখছি না। শুনছি কিন্তু শুনছি না। লিখছি কিন্তু লিখছি না। এই ভয় থেকে মুক্তি পেতে হবে। এ জন্য সম্মিলিত প্রয়াস দরকার।
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে সরকার, বেসরকারি খাত এবং সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *